ওপেন অ্যাক্সেস উইক ২০২৫-এর থিম: “আমাদের জ্ঞানের মালিক কে?”

“আমাদের জ্ঞানের মালিক কে?” — এটাই এ বছরের আন্তর্জাতিক ওপেন অ্যাক্সেস উইক (অক্টোবর ২০-২৬)-এর প্রতিপাদ্য। ২০২৫ সালের এই প্রতিপাদ্যটি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট প্রশ্ন তোলে এবং কীভাবে অস্থিরতার সময়ে সম্প্রদায়গুলি তাদের উৎপাদিত জ্ঞানের উপর নিয়ন্ত্রণ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে পারে, তা জানতে চায়। এটি আমাদের কেবল শিক্ষা এবং গবেষণায় কার প্রবেশাধিকার আছে তা নিয়েই নয়, বরং কীভাবে জ্ঞান তৈরি ও ভাগ করা হয়, এর উৎস কোথায় এবং কাদের কণ্ঠস্বর স্বীকৃত ও মূল্যবান, তা নিয়েও চিন্তা করতে উৎসাহিত করে।

এই প্রতিপাদ্যটি গত দুই বছরের আলোচনা, অনুষ্ঠান, এবং কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যেখানে মূল বার্তা ছিল "বাণিজ্যিকীকরণের ঊর্ধ্বে সম্প্রদায়"। এই সময়ে, আমরা এই লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।ডায়মন্ড ওএ (Diamond OA) এবং সাবস্ক্রাইব টু ওপেন (S2O) এর মতো কমিউনিটি-ভিত্তিক পদ্ধতিগুলো ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে।ক্রমবর্ধমান সংখ্যক সম্পাদকীয় বোর্ড বাণিজ্যিক প্রকাশনা সংস্থাগুলি থেকে পদত্যাগ করে তাদের নিজস্ব জার্নালগুলির মালিকানা পুনরুদ্ধার করেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন নিজস্ব ডেটাবেস বা বাণিজ্যিক মেট্রিকস ত্যাগ করছে শিক্ষকদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে, এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনেকেই তাদের রিভিউ, প্রমোশন ও টেনিউর নীতিমালা সংস্কার করছে যেন জ্ঞান ভাগাভাগিকে সরাসরি পুরস্কৃত করা যায়। আমরা ক্রমবর্ধমানভাবে গবেষকদের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হতে দেখছি যে ডেটা এবং আউটপুট সবসময় তাদের নিজস্ব নয়, বরং তাদের গবেষণার অংশগ্রহণকারীদের সাথে ভাগ করা হয় বা এমনকি তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

এই অগ্রগতির পরেও, নতুন কিছু ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে, যা সম্প্রদায়ের স্বার্থের চেয়ে বাণিজ্যিকীকরণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার হুমকি তৈরি করছে।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমিক জ্ঞান সংগ্রহ এবং একাডেমিক কার্যক্রমে এআই এর ব্যবহার প্রায়শই লেখক বা গবেষকদের অনুমতি ছাড়া আমাদের বিদ্যমান জ্ঞান ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। এমন নজরদারি, যা বাস্তব গ্রন্থাগারে কল্পনাও করা যায় না, এখন কিছু প্রকাশকের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়মিতভাবে ঘটছে। তবুও, ইউনেস্কোর ওপেন সায়েন্স সংক্রান্ত সুপারিশ এবং টোলুকা-কেপটাউন ঘোষণা যে সম্প্রদায়-নিয়ন্ত্রিত, সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন এবং অ-বাণিজ্যিক জ্ঞান ভাগাভাগির পন্থার কথা বলেছে, তা আমাদের এই ঝুঁকিগুলো থেকে দূরে সরিয়ে এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে পারে—যেখানে ব্যক্তি ও সম্প্রদায় নিজেদের জ্ঞান নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করে এবং তার সুফল ভোগ করে।

ওপেন অ্যাক্সেস সপ্তাহ ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে ২০ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত; তবে, বছরের যেকোনো সময়, যেটি সবচেয়ে উপযুক্ত, তখনই আলোচনা আয়োজন ও পদক্ষেপ গ্রহণে সবাইকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন সম্প্রদায় এই বছরের থিমটি নিজেদের স্থানীয় প্রেক্ষাপটে মানিয়ে নিতে পারে এবং এমন বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করতে পারে, যা তাদের জন্য সবচেয়ে অর্থবহ। স্থানীয়ভাবে মানিয়ে নেওয়া থিম প্রচারের জন্য কাস্টমাইজযোগ্য গ্রাফিক্স টেমপ্লেটও পাওয়া যাচ্ছে।

এই ঘোষণার অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ, এবারের থিমের গ্রাফিক্স এবং সপ্তাহ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যাবে openaccessweek.org ওয়েবসাইটে। সপ্তাহটির জন্য নির্ধারিত অফিসিয়াল হ্যাশট্যাগ হলো #OAWeek।

SPARC সম্পর্কে

SPARC হল একটি অলাভজনক অ্যাডভোকেসি সংস্থা যা গবেষণা ও শিক্ষার জন্য উন্মুক্ত ব্যবস্থা সমর্থন করে, যা বিশ্বের জ্ঞানকে আকার দিতে সক্ষম করে এবং এর মাধ্যমে প্রত্যেকে, সর্বত্র জ্ঞান অ্যাক্সেস করতে, অবদান রাখতে এবং উপকৃত হতে পারে। আন্তর্জাতিক ওপেন অ্যাক্সেস উইক ২০০৮ সালে SPARC এবং ছাত্র সম্প্রদায়ের অংশীদারদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আরও জানতে sparcopen.org দেখুন।

আন্তর্জাতিক ওপেন অ্যাক্সেস উইক সম্পর্কে

ওপেন অ্যাক্সেস উইক হল নীতি পরিবর্তনের অগ্রগতি এবং বিশ্বব্যাপী মানুষকে প্রভাবিত করে এমন সামাজিক সমস্যাগুলির গুরুত্বের সাথে জ্ঞানের উন্মুক্ত আদান-প্রদানের দিকে বিশ্বব্যাপী গতিকে সংযুক্ত করার এক অমূল্য সুযোগ। ইভেন্টটি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থা দ্বারা উদযাপিত হয় এবং এর সংস্থার নেতৃত্বে রয়েছে একটি বিশ্বব্যাপী উপদেষ্টা কমিটি, যা প্রতি বছরের থিম নির্বাচন করে। ওপেন অ্যাক্সেস উইকের অফিসিয়াল হ্যাশট্যাগ হল #OAweek।

Previous
Previous

Azerbaijani

Next
Next

Catalan